পরামর্শ ইসলামী সংগঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আন্দোলনের পলিসি নির্ধারণ, বার্ষিক পরিকল্পনা ও বাজেট অনুমোদন এবং উদ্ভূত জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে পরামর্শ সভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
(1) সভাপতি পরামর্শ সভার অধিবেশন আহবান করবেন।
(2) সভাপতি অধিবেশনের এজেন্ডা তৈরি করবেন।
(3) কোন সদস্য কোন বিষয় এজেন্ডাভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করলে তিনি তা পূর্বাহ্নে সভাপতিকে জানাবেন। সভাপতি কনভিনস্ড হলে তা এজেন্ডাভুক্ত করে নেবেন।
(4) নির্ধারিত সময়ে অধিবেশন শুরু হবে।
(5) আল্লাহ রাববুল ‘আলামীনের হামদ, আল্লাহর রাসূলের (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি ছালাত ও সালাম পাঠ করে এবং কিছু প্রয়োজনীয় কথা বলে সভাপতি অধিবেশন উদ্বোধন করবেন।
(6) সাধারণ অধিবেশনে উদ্বোধনী বক্তব্যের পর সভাপতির নির্দেশে সেক্রেটারী অথবা অন্য কেউ বিগত অধিবেশনের কার্যবিবরণী পাঠ করবেন।
জরুরী অধিবেশনে উদ্বোধনী বক্তব্যের পর বিগত অধিবেশনের কার্যবিবরণী পেশ না করেই সরাসরি আলোচ্য বিষয়ে চলে যাবেন।
পরবর্তী সাধারণ অধিবেশনে বিগত সাধারণ অধিবেশন এবং জরুরী অধিবেশনের কার্যবিবরণী পেশ করবেন।
(7) সভাপতি মৌখিকভাবে (প্রয়োজনে লিখিতভাবে) অনুবর্তন প্রতিবেদন (ফলো আপ রিপোর্ট) প্রদান করবেন।
(8) সভাপতি এজেন্ডা অনুযায়ী অধিবেশনের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
(9) অধিবেশন চলাকালে যদি কোন জরুরী পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে এবং তা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দাবি করে, তাহলে সভাপতি অন্য আইটেমের আলোচনা স্থগিত রেখে উদ্ভূত জরুরী পরিস্থিতি মুকাবিলার জন্য সদস্যদের পরামর্শ আহবান করবেন।
(10) হাত তুলে সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তাঁর অনুমতি নিয়ে, সদস্যগণ একে একে তাঁদের বক্তব্য পেশ করবেন।
(11) প্রত্যেক সদস্য শুধু সভাপতিকে সম্বোধন করে বক্তব্য রাখবেন।
(12) প্রত্যেক সদস্যকে মনে রাখতে হবে, পরামর্শ দেওয়া আর ডিক্টেট করতে চাওয়া এক কথা নয়।
(13) প্রত্যেক সদস্য সতর্ক থাকবেন যাতে আল কুরআন, আস্ সুন্নাহ এবং ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্য বিরোধী কোন কথা এসে না যায়।
(14) প্রত্যেক সদস্য দ্বিধাহীন চিত্তে তাঁর মত ব্যক্ত করবেন।
(15) প্রত্যেক সদস্য অপর সদস্যের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনবেন।
(16) অপর সদস্যের অধিকতর যুক্তিপূর্ণ অভিমতের পক্ষে নিজের অভিমত কুরবানী করবেন।
(17) সদস্যদের আলোচনার ভাষা মার্জিত ও শালীন হতে হবে।
(18) সদস্যগণ একে অপরের প্রতি আক্রমণাত্মক ভাষা প্রয়োগ করবেন না।
(19) সভাপতি ধৈর্য সহকারে সদস্যদের বক্তব্য শুনবেন।
তবে মাঝে মধ্যে সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবেন।
(20) কোন সদস্য আলোচ্য বিষয় বহির্ভূত বক্তব্য রাখতে থাকলে, অপর কোন সদস্য পয়েন্ট অব অর্ডার উত্থাপন করতে পারবেন। সভাপতি তখন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর সীমাবদ্ধ থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যের প্রতি আহবান জানাবেন।
(21) কোন সদস্য অপ্রাসংগিক কোন বক্তব্য দিতে গেলে সভাপতি তাঁকে থামিয়ে দেবেন।
(22) সভাপতি কিছু বলতে শুরু করলে বক্তৃতারত সদস্য বক্তৃতা বন্ধ করে বসে পড়বেন।
(23) কোন অবস্থাতেই অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করা যাবে না।
(24) সকল সদস্য সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের দিকে এগুবার চেষ্টা করবেন।
(25) যদি দেখা যায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাচ্ছে না, দ্বিতীয় রাউন্ড আলোচনার সময়ও পাওয়া যাচ্ছে না, তখন সভাপতি অধিকাংশ সদস্যের অভিমতকেই সিদ্ধান্তের ভিত্তি বানাবেন।
(26) কোন বিষয়ে সকল সদস্য একমত হয়ে গেলেও সেটি একটি অভিমত মাত্র। সভাপতি কর্তৃক রুলিং দেওয়ার পরই সেই অভিমত সিদ্ধান্তের রূপ লাভ করে।
(27) কোন বিষয়ে সদস্যগণ সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলে সভাপতি কোন একটি মতের পক্ষে কাস্টিং ভোট প্রদান করে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।
তবে আলোচ্য বিষয়ে ত্বরিৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন না থাকলে সভাপতি বিষয়টি পরামর্শ সভার পরবর্তী অধিবেশনের জন্য defer করতে পারবেন।
(28) আলোচনাকালে ভিন্ন মত ব্যক্ত করলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যাওয়ার পর সকল সদস্য সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যই মাঠে ময়দানে ভূমিকা পালন করবেন।
(29) অধিবেশনের প্রসিডিংস পরামর্শ সভার বাইরে যাবে না। বাইরে যাবে শুধু সিদ্ধান্ত।
(30) এজেন্ডাভুক্ত বিষয়গুলো আলোচিত হয়ে যাওয়ার পর সভাপতি আল্লাহ রাববুল ‘আলামীনের শুকরিয়া আদায় করবেন এবং সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।


--o--