ইসলামের জীবন দর্শন ও জীবন বিধান সম্পর্কে সঠিক ধারণার বিস্তার ঘটানোর লক্ষ্যে ইসলামী সংগঠনের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে বিভিন্ন ফোরামে বক্তৃতা-ভাষণ দিতে হয়।
বক্তৃতা-ভাষণকে আকর্ষণীয় ও ফলপ্রসূ করে তোলার জন্য কিছু নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। যেমন-
(1) বক্তা আল্লাহর হামদ এবং আল্লাহর রাসূলের (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি ছালাত ও সালাম দ্বারা বক্তৃতা শুরু করবেন।
(2) ফোরাম সম্পর্কে সচেতন থেকে সঠিক পদ্ধতিতে সম্বোধন করবেন।
(3) নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর পয়েন্ট ভিত্তিক বক্তব্য পেশ করবেন।
(4) যতো বেশি সম্ভব আল কুরআনের আয়াত ও আল হাদীছ উদ্ধৃত করবেন।
(5) আল কুরআনের আয়াত ও আল হাদীছ শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করবেন।
(6) মাউদু হাদীছ ব্যবহার করবেন না।
(7) কোন তথ্য উদ্ধৃত করতে হলে অবশ্যই নির্ভুল তথ্য উদ্ধৃত করবেন।
(8) সুন্দর সুন্দর যুক্তি ব্যবহার করে বক্তব্যকে সমৃদ্ধ করবেন।
(9) শ্রোতাদেরকে হাসাবার জন্য বানোয়াট কথা বলবেন না।
(লোকদেরকে হাসাবার জন্য বানোয়াট কথা বলতে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম) নিষেধ করেছেন।)
(10) শ্রোতাদের আবেগ নয়, বুদ্ধিবৃত্তিকে নাড়া দেওয়ার প্রয়াস চালাবেন।
(11) নেতিবাচক কথাকে নয়, ইতিবাচক কথাকে প্রাধান্য দেবেন।
(12) শ্রোতাদের সমঝ শক্তির মান অনুযায়ী শব্দ চয়ন করবেন।
(13) সাধু ভাষা ও চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটাবেন না।
(14) যেই শব্দের সঠিক অর্থ জানা নেই তা ব্যবহার করবেন না।
(15) দ্রুত ও অস্পষ্টভাবে নয়, ধীরে সুস্থে ও স্পষ্টভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।
(16) বক্তৃতার বিষয়ের গন্ডি অতিক্রম করবেন না।
(17) অশোভন শব্দ উচ্চারণ করবেন না।
(18) উস্কানিমূলক কথা বলবেন না।
(19) আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করবেন না।
(20) অল্প কথায় বেশি ভাব প্রকাশের প্রয়াস চালাবেন।
অর্থাৎ সারগর্ভ ও নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা-ভাষণ প্রদান করবেন।
(21) আল্লাহ রাববুল ‘আলামীনের হামদ উচ্চারণ করে বক্তৃতা সমাপ্ত করবেন।
উল্লেখ্য যে speech অর্থ বক্তৃতা।
যিনি বক্তৃতা করেন তিনি হচ্ছেন speaker.
demagogy (ডেমাগগি)অর্থ গলাবাজির রাজনীতি।
‘যেই রাজনৈতিক নেতা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের বদলে আবেগ উদ্দীপ্ত করে জনসাধারণকে খেপানোর চেষ্টা করেন’, তাঁকে বলা হয় demagogue (ডেমাগগ্).
সন্দেহ নেই, ইসলামী সংগঠনের একজন নেতার demagogue (ডেমাগগ্) হওয়া সাজে না।

--o--