দুঃশাসনের পাচ বছর (১৯৯৬-২০০১)
লেখকঃ জিবলু রহমান
প্রকাশনীঃ নয়ন প্রকাশন
মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামী লাঠিয়াল বাহিনীর পরিকল্পিত হামলা আর ক্ষমতার রাজনীতিতে অহেতুক মামলা দায়েরের নোংরা মনোভাবের পারদর্শীতা সম্পর্কে সচেতন মহল ওয়াকিবহাল রয়েছে। ১৯৫৪, ১৯৭২-১৯৭৫ বা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের শাসনে আওয়ামীদের চরিত্র একই থেকেছে। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন ক্ষমতা গ্ৰহণ করে হাসিনা সরকার বিরোধী দলগুলোর উপর মাঠে ঘাটে হামলা-মামলা চালিয়ে দমননীতির যে অভিষেক পালন শুরু করেছিল তা ক্ষমতা ছাড়ার শেষ দিন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে অব্যাহত রেখেছিল। ক্ষমতাহীন হাসিনা ছিলেন সুশীল,ক্ষমাশীল, পর্দানশীল চরিত্রের অধিকারী। প্রতিটি জনসভায় তার কাকুতি-মিনতি ছিল “পিতা হত্যার বিচার চাই না, শুধু একটিবার জনগণের সেবা করার সুযোগ।' ক্ষমতা গ্রহণের পর সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণের যে সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন তা কোন দেশেই দেখা যায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকার সমর্থক পত্রিকাগুলো একের পর এক চমক সৃষ্টি করেছিল। তাদের এ চমকের পিছনে কারণও ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চমক, শব্দটিকে খুব পছন্দ করতেন। এজন্য কারণ্যে-অকারণে তিনি "চমক' শব্দটি ব্যবহার করেন। আর তার অন্ধ ভক্ত পত্রিকাগুলো তাকে খুশি করার জন্য চমকের সৃষ্টি করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মিথ্যা তথ্য বা তথ্য সম্রাস করে পত্রিকাগুলো "চমক' সৃষ্টি করায় নিরীহ মানুষকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। যেমন বৃটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিক সৈয়দ নুরুল আবসারকে দিতে হয়েছে। আবসারকে যেভাবে অপমান, নির্যাতন ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে তা হয়তো তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলতে পারবেন না। কবি শামসুর রাহমানের বাসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষা ও তাবলীগ জামায়াতের লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বেলায়ও ঘটেছে আবসারের পরিণতি।