সংবাদপত্রের স্বাধীনতা
লেখকঃ তফাজ্জল হোসেন
প্রকাশনীঃ মিজান পাবলিশার্স
মরহুম তফাজ্জল হােসেন (মানিক মিয়া) আমাদের সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্র জগতের এক প্রবাদপুরুষ। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে ইত্তেফাকের পাতায় ‘মুসাফির’ ছদ্মনামে রাজনৈতিক মঞ্চ' লিখে তিনি দুর্লভ খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি তাঁর কালের রাজনৈতিক দৃশ্যপট উন্মােচনে যে গভীর বিশ্লেষণী ক্ষমতার স্বাক্ষর রাখেন, সাধরণ মানুষের প্রতি যে মমত্ববােধের পরিচয় দেন এবং সত্য ভাষণে যে অমিত সাহস দেখান তার তুলনা মেলা ভার। বস্তুত তার হাতেই নির্মিত হয়েছে আমাদের সমালােচনামূলক এবং প্রতিবাদী সাংবাদিকতার সুমহান ঐতিহ্য। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এই কৃতি-পুরুষ লােকান্তরিত হন ১৯৬৯ সালের ১লা জুন। এরপর আমাদের জাতীয় জীবনে অনেক ভাঙ্গা-গড়া, উত্থানপতন সংগঠিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জন এবং সেই স্বাধীনতাকে জনজীবনে অর্থবহ করার সংগ্রামে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এই জাতি। রাষ্ট্রীয় জীবনে তিনি যে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মুল্যবােধ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তা আজও পরিপূর্ণভাবে রূপায়িত হয়নি। তাই মানিক মিয়ার লেখনীর আবেদন আজও নিঃশেষ হয়ে যায়নি। বরং সমকালীন প্রেক্ষাপটে তাঁর মতাে সাংবাদিকের ক্ষুরধার লেখনীর প্রয়ােজন বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। এই অনুভবই আমাদের অনুপ্রাণিত করে তাঁর লেখাকে গ্রন্থাকারে পাঠকের কাছে হাজির করতে । তফাজ্জল হােসেন (মানিক মিয়া) ‘মুসাফির’ ছদ্মনামে শুধু রাজনৈতিক মঞ্চই লেখেননি, স্বনামে অনেক রাজনৈতিক চিন্তাধারা ভিন্নতর প্রকাশভঙ্গি লাভ করেছে। 'রাজনৈতিক মঞ্চ' যে চিন্তা-চেতনা ব্যঙ্গবিদ্রুপে শাণিত, নিবন্ধ ও ভাষণে তা যুক্তি ও মননে সংহত। তাঁর মানসলােককে পুরােপুরি উপলব্ধির জন্য এসব ভাষণ ও নিবন্ধের সঙ্গে আজকের পাঠকের সম্যক পরিচয় থাকা আবশ্যক। মানিক মিয়ার চিন্তা-চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলাে একটি মুক্ত ও স্বাধীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাঙক্ষা। সংবাদপত্রের স্বাধীন ভূমিকা ব্যতীত তেমন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই দ্বিতীয় সংস্করণে বইটির নাম রাখা হয়েছে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা'। বইটি মুদ্রণ প্রমাদমুক্ত করার ব্যাপারে মােঃ সাইদুর রহমান সাহেব আমাদেরকে মূল্যবান সাহায্য করেছেন। আর ‘ইতিহাসের মতাে গতিশীল জীবনের দু'টো অধ্যায়' শীর্ষক নিবন্ধটি প্রথম প্রকাশের সময় সাংবাদিক শাহীন রেজা নুর তার সংগ্রহ থেকে দিয়ে আমাদেরকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেন। বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ অত্যন্ত যত্মসহকারে প্রকাশ করতে এগিয়ে আসার জন্যে ‘মিজান পাবলিশার্স সংস্থাকে ধন্যবাদ জানাই।
-সৈয়দ তােশারফ আলী