ইসলামী সংগঠনে পরামর্শ
পরামর্শ নেয়া ও পরামর্শ দেয়া ইসলামী সংগঠনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ রব্বুল আলামীন সামষ্টিক কাজ কর্মে আসহাবে কিরামের সাথে পরামর্শ করার জন্য রাসূলকে (সা) নির্দেশ দিয়েছেন :
******* (আরবী টেক্সট) *******
“কাজ-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ কর। কোন বিষয়ে তোমার মত সুদৃঢ় হয়ে গেলে আল্লাহর ওপর ভরসা কর।” - আলে ইমরান : ১৫৯
মুমিনদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ বলেন,
******* (আরবী টেক্সট) *******
মুমিনদের বৈশিষ্ট উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ বলেন,
******* (আরবী টেক্সট) *******
তাদের সামষ্টিক কাজ-কর্মে পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়। ” -আশ শুরা : ৩৮
যেই বিষয়ে একাধিক ব্যক্তির সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে সেই বিষয়ে কোন একজনের এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এক ধরণের বাড়াবাড়ি। কোন বিষয়ে যতো মানুষের স্বার্থ জড়িত আছে ততো মানুষের সাথে পরামর্শ করাই বাঞ্ছনীয়। সংশ্লিষ্ট লোকের সংখ্যা যদি খুব বেশি হয় তাহলে তদের প্রতিনিধি স্থানীয় ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। কোন মানুষ সামষ্টিক ব্যাপারগুলোতে স্বেচ্ছাচারিতা চালানোর চেষ্টা হয়তো এই জন্য করে যে, সে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যের অধিকার হরন করতে চায় অথবা সে নিজেকে বড় এবং অন্যকে ছোট মনে করে। এই দু’ধরণের মনোভাবই খারাপ। মুমিন চরিত্রে এই ধরনের মনোভাব যেন প্রবেশ করতে না পারে তারই জন্য ইসলাম পারস্পরিক জীবনের অপরিহার্য শর্ত বানিয়ে দিয়েছে। যেসব বিষয় অপরের স্বার্থ ও অধিকারের সাথে জড়িত সেগুলোর ফয়সালা করা অতি বড় দায়িত্ব। আখিরাতে জবাবদিহির অনুভূতি যার আছে তিনি এমন বিষয়গুলোতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা তদের প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করার চেষ্টা অবশ্যই করবেন যাতে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে অসতর্কভাবে কোন ত্রুটি ঘটলেও কোন এক ব্যক্তির উপর তার দায় দায়িত্ব না পড়ে।
মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে লোকেরা পূর্ণ স্বাধীন হতে হবে। মানুষের মুখ বন্ধ করে তাদের হত-পা বেঁধে তাদেরকে অন্ধকারে রেখে সামষ্টিক ব্যাপারসমূহ পরিচালনা করা বড়ো রকমের যুলম।
ঐকমতের ভিত্তিতে যেই পরামর্শ দেয়া হয় অথবা যা অধিকাংশ ব্যক্তির মত হয় তা মেনে নেয়াই বাঞ্ছনীয়। কেননা কোন ব্যক্তি যদি সকলের মত পাওয়ার পর স্বেচ্ছাচারিতা অবলম্বন করে তাহলে পরামর্শ করার নীতি কার্যত: অর্থহীন হয়ে পড়ে। কেবল পরামর্শ নিলেই হয় না। পরামর্শের পর সর্বসম্মতভাবে অথবা অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে যেই সিদ্ধান্ত হবে সেই অনুযায়ী ব্যাপারসমূহ সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।
আরো একটি মৌলিক কথা মনে রাখা দরকার। মুসলিমদের ব্যাপারসমুহ নিষ্পন্ন করার ক্ষেত্রে মাজলিসে শুরা নিরংকুশ ক্ষমতার অধিকারী নয়। পরামর্শ দীন ইসলামের নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই হতে হবে। মুসলীমগণ শারীয়াহের ব্যাপারে পরামর্শ করবে কোন বিধানের সঠিক তাৎপর্য বুঝার জন্য এবং তা কার্যকর করার লক্ষে সর্বোত্তম পন্থা নির্ধারণ করার জন্য। যেসব বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল(সা) চূড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন সেসব বিষয়ে মাজলিসে শূরা স্বাধীনভাবে কোন নতুন ফয়সালা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে পারে না।


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি