ইসলামী সংগঠন ও ইকামতে দীন
সমাজের চাকা গতিশীল। পরিবর্তনের ধারা এখানে লেগে আছে। আকাংখিত অনাকাংখিত ধারায় প্রবাহিত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সমাজ জীবনে ইসলামের অনুপস্থিতি। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণেই সমাজে অশান্তি ও অস্বস্তি বিরাজ করে। আর এই অশান্তি ও অস্বস্তি থেকে বাঁচবার তাগিদে মানব প্রকৃতি বিক্ষোব্ধ হয়ে ওঠে। মানুষের মনের ক্ষোভ অসন্তোষে এবং অসন্তোষ বিদ্রোহে পরিণত হয়। এভাবেই মানব সমাজে পরিবর্তনের পালা চলতে থাকে।
যখন একটা পরিবর্তন ঘটে তখন মানুষ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তারা বোঝতে পারে যে তারা যা দেখেছে তা মরিচিকা ছাড়া আর কিছুই নয়। নতুন বোতলে পুরোনো মদই তাদের ভাগ্যে জুটেছে। অশান্তি ও অস্বস্তি জগদ্দল পাথরের মতোই তাদের ওপর চেপে আছে। এথেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, এভাবে প্রকৃত শান্তি ও স্বস্তির প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।
সমাজ পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় নিজস্ব ভূমিকা পালনের জন্যই ইসলামের আবির্ভাব। ইসলাম মানব সমাজকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে নতুন ধাঁচে গড়ে তুলে মানব গোষ্ঠীর শান্তি ও স্বস্তির নিশ্চয়তা বিধান করতে চায়।
এই শান্তি ও স্বস্তির নিশ্চয়তা বিধানের প্রয়োজনে ইসলাম মানুষের ব্যক্তি জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনের বৃহৎ গন্ডী পর্যন্ত সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হতে চায়।
তবে ইসলাম নিজে নিজেই সমাজে কায়েম হয়ে যায় না। কোন ব্যক্তির একক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ও ইসলাম কায়েম হতে পারেনা। এর জন্য প্রয়োজন একদল মানুষের সংগঠিত উদ্যোগ। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা।
ইসলামকে সমাজ জীবনে কায়েম করার পন্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে মত পার্থক্য হওয়াই স্বাভাবিক ছিলো। মত পার্থক্যের চক্করে পড়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বিঘিতœ হোক, এটা আল্লাহ চাননি। তাই তিনি জীবন বিধান পাঠানোর সাথে সাথে রসূলও পাঠিয়েছেন জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পদ্ধতি শিক্ষা দেবার জন্য। আমাদের জন্য শেষ নবী মুহাম্মাদ (সা) এর কর্মপন্থাই একমাত্র অনুসরণীয় কর্মপন্থা।
ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পরিচালনার জন্য যেই সংগঠন গড়ে ওঠে তা মানুষকে আল্লাহর পথে আসার জন্য আহবান জানাতে থাকে। যারা আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে সংগঠন তাদেরকে সংঘবদ্ধ করে সুসংগঠিত শক্তিতে পরিণত করে এবং তদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। এই সংগঠিত এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যক্তিরাই হয় ঘুণে ধরা সমাজকে আঘাত হেনে ভেঙ্গে ফেলার এবং ইসলামী মূল্যমানের ওপর নতুন সমাজ বিনির্মাণের প্রধান উপাদান। ইসলামী সংগঠনের লোকদের দ্বারা যখন সরকার গঠিত হয় তখন সমাজের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত সকল স্তরে আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় জীবনের সবদিক ও বিভাগে। সমাজ থেকে রাজনৈতিক য্ল্মু অর্থনৈতিক শোষণ, সামাজিক ভেদাভেদ এবং অশ্লীলতা দূর হয়। সমাজের সর্বত্র কল্যাণের প্লাবন সৃষ্টি হয় অশান্তি আর অস্বস্তির অভিশাপ থেকে মানুষ মুক্তি লাভ করে।


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি