কারাগারের স্মৃতি
লেখকঃ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী
প্রকাশনীঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী (রহ.) ছিলেন একজন আলেমে দ্বীন, বরন্যে রাজনীতিবিদ, অভিজ্ঞ। পার্লামেন্টেরিয়ান, দেশপ্রেমিক এবং সু-লেখক। তিনি ছিলেন গােটা দুনিয়ার ইসলামপ্রিয় জনতার অতি । কাছের একজন মানুষ। কিশাের বয়সেই তিনি ইসলামী আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রসংঘ পূর্ব পাকিস্তানের সভাপতি এবং নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের দুই মেয়াদ সভাপতির দায়িত্ব পালন। করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে যােগদান করেন এবং পর্যায়ক্রমে তিনি ঢাকা মহানগরী আমীর, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল, সেক্রেটারী জেনারেল এবং অবশেষে জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচিত হন। মাওলানা নিজামী ছিলেন এদেশের গণমানুষের অতি প্রিয় নেতা। যার প্রমাণ তিনি দু'মেয়াদে পাবনা-১ আসন থেকে বিপুল ভােটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেশ গঠনে অসামান্য অবদান। রয়েছে তার। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে অভূতপূর্ব সাফল্য প্রদর্শন করেছিলেন। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্যও মাওলানা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তার স্বীকৃতি সরূপ ২০০৯ সালের ইউ, এস এ ভিত্তিক “দ্যা রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ সেন্টার" কর্তৃক বিশ্বের শীর্ষ ৫০ জন ব্যক্তির মধ্যে মাওলানা ছিলেন একজন। ২০০০ সালের ১৯ নভেম্বর মাওলানা নিজামী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচিত হওয়ার পর ইসলাম বিরােধী শক্তিগুলাে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করার নানামূখী অপতৎপরতার পর ইসলামের দুশমনেরা ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে মিথ্যা অভিযােগে অভিযুক্ত করে মাওলানাকে। কারণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন অপরাধের তদন্তে স্বাধীনতাত্তোর গঠিত বিভিন্ন তদন্ত কমিশনের চূড়ান্ত রিপাের্ট এবং সরকারি নথিতে কোথাও অপরাধি হিসেবে তাঁর নাম ছিল না। ট্রাইবুন্যাল গঠনের পূর্ব পর্যন্ত তথাকথিত মিথ্যা। অভিযােগে সারা বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে কোনাে মামলাতাে দূরে থাক একটি জিডি পর্যন্ত হয়নি। এ থেকে বুঝা যায় মাওলানা নিজামীর অপরাধ কি ছিল! মূলত তার অপরাধ ছিল তিনি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের একজন সিপাহসালার। এদেশকে যারা তাবেদার রাষ্ট্র বানাতে চায়, অবাধে লুটপাট চালাতে। চায়, অবৈধভাবে স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারা মাওলানা নিজামী ও তার দল জামায়াতে ইসলামীকে প্রধান বাধা মনে করে। আর তাইতাে পরিকল্পিতভাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় গণমানুষের এ প্রাণ প্রিয় নেতাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মিথ্যা অভিযােগের ভিত্তিতে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে হত্যা করে।